Sunday, September 9, 2012

৩৯ বছর অপোর অবসানে শীর্ষে আর্জেন্টিনা

সেবারও এমনই হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছিলেন তিনি। পজেটিভ ফলাফল ও স্থানীয় ভক্তদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় সিক্ত হতে হয় তাকে। পরপর দুই ম্যাচ ড্র করায় তখন আর্জেন্টাইন ফুটবল তো বটেই লায়নেল মেসির সমালোচনাও তুঙ্গে। কর্ডোভায় দর্শকে টাইটুম্বর কেম্পেস স্টেডিয়ামে কোস্টারিকার বিপে আর্জেন্টাইন শৈল্পিক ফুটবলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ৩-০ গোলে জয়ে নক-আউটেও জায়গা হয় ২০১১ সালের কোপা আমেরিকার স্বাগতিকদের। প্রায় ১৪ মাস পর ওই কর্ডোভায়ই স্থানীয় দর্শকেরা দেখলেন ফুটবলে মেসির মোহনীয় স্টাইলের আরেকরূপ। তাদের প্রিয়দলও পেলো বহু প্রতীতি এক জয়। ৩৯ বছর অপোর পর ভক্তরা প্রথমবারের মতো দেখলেন ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপের বাছাইয়ের ম্যাচে আর্জেন্টিনা হারিয়ে দিলো প্যারাগুয়েকে।
সবুজ ঘাসের বুকে বল পায়ে ছুটে চলা অপ্রতিরোধ্য লায়নেল মেসি। শুক্রবার ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের বাছাইয়ের ল্যাটিন আমেরিকার অঞ্চলের বহু-প্রতীতি ম্যাচে তার দল মুখোমুখি হয় প্যারাগুয়ের। ম্যাচে নিজের প্রতিটি নড়াচড়ায় স্বাগতিক দর্শকদের মোহিত করেছেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। ফলে জিততে কষ্ট হয়নি তার দলের। ৩-১ গোলের জয়ের পাশাপাশি ল্যাটিন অঞ্চলের বাছাইপর্বের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানও দখলে নেয় আর্জেন্টিনা। ডি মারিয়া ও হিগুয়েনের পর অসাধারণ ফ্রি-কিক গোলে ভক্তদের শরীরে শিহরণ জাগিয়ে দেন মেসি। ছয় ম্যাচ শেষে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ল্যাটিন বাছাই পর্বের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে রয়েছে আর্জেন্টিনা।
প্রীতিম্যাচসহ প্যারাগুয়েরে বিপে জয় ছিল ১৯৮৬ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের টানা ষষ্ঠ। আর এ দিনের এক গোলে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে শেষ পাঁচ ম্যাচে মেসির গোলসংখ্যা গিয়ে ঠেকল ৯-এ। টানা তৃতীয় হ্যাটট্রিকও পেয়ে যেতে পারতেন ফুটবলের খুদে জাদুকর। কিন্তু দুই দফায় তার নেয়া শট প্রতিপরে গোলরককে পরাস্ত করতে সম হলেও ফাঁকি দিতে পারেনি গোলবার।
স্বাগতিক কলম্বিয়ার কাছে ৪-০ গোলে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় দল উরুগুয়ের বিধ্বস্তের খবর জেনে প্যারাগুয়ের মোকাবেলায় মাঠে নামে আর্জেন্টিনা। জিতলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান। সুযোগ হেলায় হারাননি মেসি অ্যান্ড কোং। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদ উইংঙ্গার ডি মারিয়ার দর্শনীয় গোলে লিড আর্জেন্টিনার। ১৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে প্যারাগুয়েকে সমতায় ফেরান জনাথন ফাব্রিও। এই গোল হজমে বিচলিত স্বাগতিক দর্শকদের মাঝে স্বস্তি প্রতিষ্ঠার মোটেও সময় নেননি রিয়ালের আরেক ফরোয়ার্ড গঞ্জালো হিগুয়েন। ৩১ মিনিটে তার গোলে আবারো এগিয়ে যায় স্বাগতিকেরা। ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করা আর্জেন্টাইনদের জয় নিশ্চিত করে দেন লায়নেল মেসি। ৬৪ মিনিটে দূরপাল্লার অসাধারণ ফ্রিকিক গোলে উন্মাদনায় মত্ত করেছেন স্থানীয় দর্শকদের।
আর্জেন্টিনার কাছে হারে পয়েন্ট টেবিলের একদমই তলানিতে পৌঁছে গেছে আফ্রিকা বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে খেলা প্যারাগুয়ে। ছয় ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট মাত্র ৪। এ দিকেও কলম্বিয়ার কাছে ৪-০ গোলে পরাজয়রের সুবাদে চার নম্বরে নেমে গেছে উরুগুয়ে। ছয় ম্যাচ শেষে তাদের সংগ্রহ ১১ পয়েন্ট। চলতি বাছাই পর্বে বর্তমান কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়নদের এটাই প্রথম হার। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে তারকা ফরোয়ার্ড র‌্যাদামেল ফালকাওয়ের গোলে লিড নেয় কলম্বিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে তেয়োফিলো গুতিয়ারেজের দুই গোল ও জুনিগার ল্যভেদে ৪-০ গোলের জয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকেরা।
দিনের অন্য দুই ম্যাচে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে স্বাগতিক পেরু ও ইকুয়েডর। অভিষিক্ত ফিলিপ সেইসিডোর একমাত্র গোলে ইকুয়েডর ১-০ গোলে হারিয়ে দেয় বলিভিয়াকে। ছয় ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছে ইকুয়েডর। আর টানা চার হারের পর পেরু ২-১ ভেনিজুয়েলাকে হারিয়ে ফিরেছে জয়ের ধারায়। সূত্র : ইন্টারনেট

No comments:

Post a Comment