জয়ের আমেজ নিয়ে আর শ্রীলঙ্কা যাওয়া হচ্ছে না মুশফিকদের। পোর্ট অব স্পেনে
শেষ ম্যাচটি হেরেছে তারা ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর বিরুদ্ধে। ম্যাচে মূলত ব্যাট ও
বল হাতে ত্রিনিদাদের তিন ক্রিকেটার ওটলে, শেরউইন গঙ্গা ও ডেভ মোহাম্মাদের
পারফরম্যান্সের কাছে জয়ের স্বপ্ন মুছে যায় বিসিবির। তবে গতকাল ভোরে
(বাংলাদেশ সময়) অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে যেমন হয়নি মুশফিকদের ব্যাটিং, তেমনি ভালো
করতে পারেননি তারা বোলিং। নতুবা ১২৫ রানে টার্গেট দিয়ে যখন শেষ দুই ওভারে
জয়ের জন্য ১৯ রান প্রয়োজন ছিল ত্রিনিদাদের, সেই ম্যাচই হাতছাড়া হয়। রাজ্জাক
আগের তিন ওভার দুর্দান্ত করেছেন (৩-২-৪-৩)। সেই রাজ্জাক ওই ওভারে দিয়েছেন
১৩ রান। ম্যাচ সেখানেই শেষ হয়। সাকিব শেষ ওভারে যেখানে দরকার ৫ রান, সেখানে
আর কী করবেন। তিন বল হাতে রেখেই জয় তুলে নিয়ে ৫০তম স্বাধীনতা দিবসে আয়োজিত
টুর্নামেন্টে আনন্দে মেতে ওঠে ত্রিনিদাদবাসী। চার উইকেটে হেরেছে বিসিবি
একাদশের ব্যানারে খেলা বাংলাদেশ জাতীয় দল।
আসলে প্রথম ব্যাটিং করে
তামিমবিহীন এ ম্যাচে আশরাফুলরা সাদামাটা একটা স্কোর দাঁড় করায় (১২৪)।
আশরাফুল আগের ম্যাচের মতোই ভালো ব্যাটিং করেছেন। ২১ বলে একটি ছক্কা ও চারটি
বাউন্ডারির সাহায্যে ৩০। এরপর নাসির হোসেনের ৩৭ বলে ৩১ ছাড়া আর কেউই ব্যাট
হাতে দাঁড়াতেই পারলেন না ত্রিনিদাদের বোলারদের সামনে। ডেভ মোহাম্মাদ,
শেরউইন গঙ্গা ও ওটলের মারাত্মক বোলিংয়ের মুখে কোনোরকম হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন
মুশফিকরা। ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ওই রান করেছিলেন তারা। জুনায়েদ পাঁচ,
মুশফিক তিন ছাড়াও লোয়ার অর্ডারে আবুল হাসান, রাজ্জাক, ইলিয়াস সানি, শফিউলকে
পর্যন্ত মাঠে নামতে হয়েছে ওই ২০ ওভারের ব্যাটিং করতে। ভাগ্যিস অলআউট হয়নি!
অন্যদের মধ্যে সাকিব ১০, মাহামুদুল্লাহ ১২, জিয়ার ১৩ রান উল্লেখ করার মতো।
ডেভ মোহাম্মাদ ১৭ রানে ও এস গঙ্গা ২০ রানে নেন তিনটি করে উইকেট। এ ছাড়া
ওটলে নিয়েছেন দুই উইকেট।
এরপর ১২৫ রানের জয়ের টার্গেটে খেলতে নেমে
ত্রিনিদাদকে এক সময় মনে হচ্ছিল ৫০ রানও করতে পারবে না। এক রান থেকে উইকেট
পতন শুরু হয়ে ১২ রানে চলে যায় তাদের পাঁচ উইকেট। ষষ্ঠ উইকেট চলে যায় ৫১
রানে। এর মধ্যে শফিউল দুই ওপেনারকে ছয় রানের মধ্যে আউট করে সূচনা করে দেয়ার
পর রাজ্জাকঝড় শুরু হয়। তিন তিনটি উইকেট তুলে নেন তিনি মুহূর্তেই। জয়
সুনিশ্চিতই ছিল যেন বাংলাদেশের। কিন্তু সাত ও আট নাম্বার ব্যাটসম্যান
যথাক্রমে শেরউইন গঙ্গা ও ওটলে মিলে সপ্তম উইকেট জুটিতে বাজিমাৎ করেন। তারা
অপরাজিত ৭৮ রানের পার্টনারশিপ উপহার দিয়ে বিসিবি একাদশকে হতাশার সাগরে
নিমজ্জিত করেন। বিশেষ করে শেষের দিকে যে ব্যাটিং তারা করেছেন চার ও ছক্কা
হাঁকানোর মাধ্যমে, গোটা ম্যাচে সেটাই ছিল টি-২০ ম্যাচের সেই সার্থকতা। তিন
বল হাতে রেখেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে এবং জয়সূচক রান নেন ওটলে সাকিবকে
নয়নাভিরাম এক ছক্কা হাঁকানোর মধ্য দিয়ে। ওই রানের মাধ্যমে ওটলের হাফ
সেঞ্চুরিও পূর্ণ হয়। ২৭ বলে চারটি ছক্কা ও একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৫২ রানে
অপরাজিত ছিলেন তিনি। সাথে ছিলেন ৪০ বলে ৪০ রান করা গঙ্গা। এ ছাড়া এন
মোহাম্মাদের ২৪ রান ছিল উল্লেখযোগ্য। বল হাতে রাজ্জাক ১৭ রানে তিনটি এ ছাড়া
শফিউল নেন দুই উইকেট। উল্লেখ্য, এ সফরের তিন ম্যাচে দু’টি জয় ও একটিতে
হারল মুশফিকরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বিসিবি একাদশ : ১২৪/৯ (২০ ওভার),
আশরাফুল ৩০, নাসির ৩১ অপ:, জিয়া ১৩, রিয়াদ ১২, সাকিব ১০; ডেভ মোহাম্মাদ
৩/১৭, শেরউইন গঙ্গা ৩/২০, ওটলে ২/১২।
টিএ্যান্ডটি ইনিংস : ১২৯/৬ (১৯.৩
ওভার) ওটলে ৫২ অপ:, শেরউইন ৪০ অপ:, এন মোহাম্মাদ ২৪; রাজ্জাক ৩/১৭, শফিউল
২/১২, আবুল ১/২১। ফল : টিএ্যান্ডটি চার উইকেটে জয়ী।
No comments:
Post a Comment