Thursday, November 1, 2012

ভাষা সৈনিক, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমানের জেরা অব্যাহত রয়েছে। জেরাকালে তিনি স্ববিরোধী তথ্য প্রদান করেছেন।

ভাষা সৈনিক, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমানের জেরা অব্যাহত রয়েছে। জেরাকালে তিনি স্ববিরোধী তথ্য প্রদান করেছেন। অনেক প্রশ্নের উত্তর এই মুহূর্তে বলতে পারছি না, সাথে নেই, নোটে নেই ইত্যাদি বলে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। জেরাকালে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি যেসব জেলায় তদন্তকালে সফর করেছেন, সেসব জেলার সব বধ্যভূমি ও গণকবর পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু তিনি চুকনগর গণকবর পরিদর্শন করেননি বা চুকনগর হত্যাকান্ড নিয়েও তদন্ত করেননি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনিই ট্রাইব্যুনালে জানান, চুকনগর গণকবর খুলনার ডুমুরিয়া থানায় অবস্থিত। তদন্তকালে তিনি ১৫টি জেলায় সফর করেছেন, তার মধ্যে খুলনাও ছিল।
শান্তি কমিটির জেলা আহবায়কদের মধ্যে ক'জন জামায়াতের সদস্য ছিলেন, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা। আর শান্তি কমিটির নির্বাহী কমিটির ২১ জনের মধ্যে তার জানা মতে ২ জন জামায়াতের সদস্য ছিলেন। কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির নির্দেশনাসমূহ কার স্বাক্ষরে অধস্তন সংগঠনের কাছে যেত? তার উত্তরেও তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। তবে ওই সময় কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যাবলী, সিদ্ধান্ত ও ঘোষণাসমূহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হত ও রেডিও-টিভিতে প্রচারিত হত। তাই অধস্তনদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু সব জেলায় পত্রিকা বিলি হত কি না তার কোন প্রামাণ্য তথ্য তার কাছে ছিল না। কিংবা ওই সময় ঢাকা টেলিভিশন স্টেশনের সম্প্রচার তরঙ্গের ব্যাপ্তি কতটুকু ছিল তাও তিনি জেরাকালে জানাতে পারেনি। ঢাকার বাইরে শান্তি কমিটি সর্বপ্রথম কোন জেলায় গঠিত হয়েছিল? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন নরসিংদীতে হয়েছিল। কিন্তু ৭১ সালে নরসিংদী কোন জেলা ছিল না ঢাকার মহকুমা ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে স্মরণ করতে পারছি না।
গতকাল বুধবার দিনভর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নিজামুল হকের নেতৃত্বে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হকের ট্রাইব্যুনালে এই জেরা চলে। অধ্যাপক গোলাম আযম দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাঠগড়ায় ছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেন ডিফেন্স পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। তাকে সহায়তা করেন এডভোকেট মনজুর আহমদ আনসারী, এডভোকেট শিশির মুহাম্মদ মনির প্রমুখ। জেরাকালে বারবার প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বাধা দেয়া হয়। মাঝে মাঝে বিতর্কও চলে। ট্রাইব্যুনাল আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ করার জন্য ডিফেন্স পক্ষকে অনুরোধ জানান।
গতকালের জেরা :
জেরা শুরু ১০টা ৫১ মিনিট।
প্রশ্ন : ঢাকার বাইরে শান্তি কমিটি সর্বপ্রথম কোন জেলায় গঠিত হয়েছিল?
উত্তর : ৩/৫/৭১ নরসিংদীতে হয়েছিল।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে নরসিংদী ঢাকা জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ঢাকার মহকুমা ছিল।
উত্তর : এই মুহূর্তে স্মরণ করতে পারছি না।
প্রশ্ন : কার আহবানে সভাটি হয়েছিল?
উত্তর : কার আহবানে হয়েছিল, সে ব্যাপারে আমার কাছে নোট নেই। তবে সভায় আহবায়ক করা হয়েছিল মিয়া আব্দুল মজিদকে।
প্রশ্ন : এর তথ্য সূত্র?
উত্তর : দৈনিক সংগ্রাম ৫/৫/৭১ ও ১২/৫/৭১।
প্রশ্ন : ৫/৫/৭১ এ দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার খবরের হেডিং এ, ‘নরসিংদীতে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি গঠিত হয়েছে' মর্মে উল্লেখ ছিল?
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : কোন কোন ব্যক্তির সমন্বয়ে শান্তি কমিটি হয়েছিল তা সংবাদে উল্লেখ নেই।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন :  খাজা খয়ের উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির সদস্যরা নরসিংদীর সভায় উপস্থিত ছিলেন না, তদন্তে আপনি তা পেয়েছেন।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : ঢাকার বাইরে রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় শহরে শান্তি কমিটি সর্বপ্রথম কবে গঠিত হয়েছিল?
উত্তর : তথ্যসমূহ এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই।
প্রশ্ন : শান্তি কমিটির নির্বাহী কমিটির সদস্য সংখ্যা কত ছিল?
উত্তর : ২১ জন।
প্রশ্ন : এর মধ্যে কতজন জামায়াতের?
উত্তর : আমার জানা মতে ২ জন।
প্রশ্ন : কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটিতে সদস্য সচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও দফতর সম্পাদক এর পদ ছিল?
উত্তর : এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।
প্রশ্ন : মৌলভী ফরিদ আহমদের নেতৃত্বে আরেকটি শান্তি কমিটি ছিল, তা আপনার জানা আছে?
উত্তর : এই মুহূর্তে আমার ডকুমেন্টে খুঁজে পাচ্ছি না।
প্রশ্ন : মৌলভী ফরিদ আহমদ কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন কি না এমন তথ্য আছে?
উত্তর : কেন্দ্রীয় কমিটিতে ফরিদ আহমদ নামে একজন ছিলেন। তবে তিনি মৌলভী ফরিদ আহমদ কি না জানি না।
প্রশ্ন : শান্তি কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কার্যবিবরণী সংগ্রহ করেছেন?
উত্তর : সংগ্রহ করতে পারিনি।
প্রশ্ন : কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সভা অনুষ্ঠান সংক্রান্ত কোন খবরের পত্রিকার কাটিং সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন?
উত্তর : হ্যাঁ। ১৩/৪/৭১ সালের পত্রিকা।
প্রশ্ন : কোন পত্রিকা?
উত্তর : দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান ও দৈনিক পয়গাম।
প্রশ্ন : দৈনিক আজাদে উল্লেখিত খবর বার্তা সংস্থা এপিপি পরিবেশিত?
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : সংবাদে শোভাযাত্রা আহবানের কথা বলা আছে?
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : শোভাযাত্রাটি শান্তি কমিটির কোন তারিখে, কোথায়, কার সভাপতিত্বে সিদ্ধান্ত হয়েছিল?
উত্তর : এটা উল্লেখ নেই। তবে নাগরিক শান্তি কমিটির উদ্যোগে শোভাযাত্রার কথা বলা আছে।
প্রশ্ন : শোভাযাত্রা আহবানকারী বা বিবৃতিদাতার নাম নেই।
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : দৈনিক পাকিস্তান ও দৈনিক পয়গাম পত্রিকার ক্ষেত্রে দৈনিক আজাদের কথাই প্রযোজ্য?
উত্তর : একই ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তবে দৈনিক পয়গাম পত্রিকায় আরো বলা হয়েছে যে, নাগরিক শান্তি কমিটির উদ্যোগে ঢাকার বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে এক শান্তি জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রশ্ন : নির্বাহী কমিটির দায়িত্ব কি হবে শান্তি কমিটির সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, এমন তথ্য পেয়েছেন?
উত্তর : কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের কার্যাবলী দ্রুত ও যথোপযুক্তভাবে চালিয়ে যাওয়া এবং তাদের নীতিপূর্ণ আন্তরিকতার সাথে কার্যকরী করার জন্যই নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া আরো অন্যান্য দায়িত্ব দেয়া হয়।
প্রশ্ন : দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে এই সভায় তা উল্লেখ করা হয়?
উত্তর : দেশে স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা আছে।
প্রশ্ন : ৭১ সালে প্রত্যেকটি জেলা ও মহকুমায় শান্তি কমিটি হয়েছিল?
উত্তর : যতগুলো প্রমাণ পেয়েছি, তা ডকুমেন্টে আছে।
প্রশ্ন : জেলা বা মহকুমা শান্তি কমিটির আহবায়কদের মধ্যে কতজন জামায়াতের সদস্য ছিল?
উত্তর : সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়।
প্রশ্ন : জেলা বা মহকুমা শান্তি কমিটির কার্যাবলী কার নির্দেশনায় পরিচালিত হত?
উত্তর : কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির নির্দেশনায়।
প্রশ্ন : কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির নির্দেশনাসমূহ কার স্বাক্ষরে অধস্তন সংগঠনের কাছে যেত?
উত্তর : এই মুহূর্তে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। তবে ওই সময় কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যাবলী, সিদ্ধান্ত ও ঘোষণাসমূহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হত ও রেডিও-টিভিতে প্রচারিত হত। তাই অধস্তনদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল।
প্রশ্ন : ওই সময় ঢাকা টেলিভিশন সেন্টারের সম্প্রচারের ব্যাপ্তি কত মাইল ছিল?
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : ঢাকায় প্রকাশিত সংবাদপত্র টেকনাফ ও তেঁতুলিয়ায় যেতে কত সময় লাগত?
উত্তর : সময় বেশি লাগত, কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নত ছিল না।
প্রশ্ন : ৭১ সালের দৈনিক সংগ্রাম ও দৈনিক পয়গাম পটুয়াখালীতে বিলি হত?
উত্তর : এরকম প্রমাণ্য তথ্য নেই। তবে বিলি হত বলে শুনেছি।
প্রশ্ন :৭১ সালের দৈনিক সংগ্রামের সার্কুলেশন কত ছিল?
এ নিয়ে বিতর্ক শুরু করে প্রসিকিউশন। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, পত্রিকার সার্কুলেশন জানা তদন্ত কর্মকর্তার পক্ষে সম্ভব নয়। ডিফেন্সের পক্ষে এডভোকেট মিজানুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন পত্রিকা পড়ে সারা দেশে অপরাধ করা হয়েছে। তাই জানা দরকার ওই পত্রিকা কতজন পড়তে পেরেছিল। ওই পত্রিকা সারা দেশের মানুষ পড়তে পারত কি না তাও জানা দরকার। বিতর্কের পর এ প্রশ্নটি নেয়নি ট্রাইব্যুনাল। এরপর প্রশ্ন ছিল ৭১ সালে কয়টা থানায় দৈনিক সংগ্রাম বিলি হত? ট্রাইব্যুনাল এই প্রশ্নটিও গ্রহণ করেনি।
প্রশ্ন : ৭১ সালের জেলা/মহকুমা/থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের মধ্যে কতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন?
উত্তর : তদন্তকালে আমি যেসব স্থানে গিয়েছি, সেখানকার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার যারা এসেছেন, তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তবে তাদের সংখ্যা এই মুহূর্তে বলতে পারব না।
প্রশ্ন : ৭১ সালের জেলা কমান্ডারদের মধ্যে কতজনকে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন?
উত্তর : আমি লিখিতভাবে কোন ব্যক্তিকে হাজির হওয়ার অনুরোধ করিনি। জেলা মুক্তিযোদ্দা কমান্ডাররাও তার ব্যতিক্রম নয়।
প্রশ্ন : কতজন সেক্টর কমান্ডার জীবিত আছেন? তাদের মধ্যে কতজনের জবানবন্দী নিয়েছেন?
উত্তর : জীবিতদের মধ্যে ২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।
প্রশ্ন : সাব সেক্টর কমান্ডারদের মধ্যে কতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন?
উত্তর : একজন।
প্রশ্ন : এই ৩ জনের নাম বলেন।
উত্তর : মেজর জে. (অব.) কে এম শফিউল্লাহ বীরবিক্রম, মেজর (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী এবং মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম। তবে দুপুরের বিরতির পর আবু ওসমান চৌধুরীর পদবী মেজর (অব.) এর পরিবর্তে লে. কর্নেল (অব.) হিসেবে ট্রাইব্যুনাল স্বপ্রণোদিত হয়ে সংশোধন করে।
প্রশ্ন : মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম কোন এলাকার সাব সেক্টর কমান্ডার ছিলেন?
উত্তর : ৮নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার ছিলেন।
প্রশ্ন : বর্তমানের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কতজন জেলা ইউনিট কমান্ডারের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন?
উত্তর : এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।
প্রশ্ন : এই মামলার তদন্তে কয়টা জেলা সফর করেন?
উত্তর: তিনি জেলার সংখ্যা বলতে গিয়ে ১২টি উল্লেখ করেন। পরে তিনি ১৫টি জেলার নাম বলেন। জেলাগুলো হলো, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, মেহেরপুর, টাঙ্গাইল, খুলনা, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনায় গিয়েছি।
প্রশ্ন: ১৫টি জেলার কয়টি উপজেলায় গিয়েছেন?
উত্তর: এই মুহূর্তে সঠিক সংখ্যা বলতে পারছি না।
প্রশ্ন: তদন্ত কাজ এককভাবে করেছেন নাকি একটি টিম ছিল?
উত্তর: এই মামলাটির তদন্ত একাই করেছি। তবে তদন্তকালে কয়েকজন সহায়তায় ছিল।
প্রশ্ন: সহায়তাকারীদের মধ্যে কেউ সাক্ষ্য গ্রহণ বা আলামত জব্দ করেছে?
উত্তর: কেউ কেউ আমার নির্দেশনা মতো করেছে।
প্রশ্ন: ট্রাইব্যুনালের অন্য মামলার তথ্য উপাত্ত রিপোর্ট দাখিলের সময় ব্যবহার করেছেন?
উত্তর: হ্যাঁ। কিছু কিছু ব্যবহার করেছি।
প্রশ্ন: তার মধ্যে কোন কোন মামলার আলামত ব্যবহার করেছেন?
উত্তর: কমপ্লেইন্ট রেজিস্ট্রি নং-১ তারিখ: ২১/৭/১০ ও কমপ্লেইন্ট রেজিস্ট্রি নং-৩: তারিখ ২৬/৭/১০ এর আলামত ব্যবহার করেছি।
প্রশ্ন: অন্য মামলার কয়জন সাক্ষীর জবানবন্দী ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে, তা আপনি জানেন?
উত্তর: রেকর্ড না দেখে বলতে পারবো না।
জেরার এই পর্যায়ে দুপুরের বিরতি হয়। বিরতির পর দুপুর ২টা ২০ মিনিটে পুনরায় জেরা শুরু হয়।
প্রশ্ন: অন্য কোন মামলার জবানবন্দী আপনি ব্যবহার করেছেন?
উত্তর:  কমপ্লেইন্ট রেজিস্ট্রি নং-২: তারিখ ২১/৭/১০ এর ৩জন সাক্ষীর জবানবন্দী ব্যবহার করেছি।
প্রশ্ন: ৩ নং মামলার অভিযোগকারী কে এবং অভিযুক্ত কে?
ট্রাইব্যুনাল বলেন, অভিযোগকারী কে এই অংশটা যাবে না।
উত্তর: আমার রেকর্ডে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম নেই।
প্রশ্ন: ১,২ ও ৩ নং মামলার তদন্ত কর্মকর্তার নাম বলেন।
উত্তর: আবদুর রাজ্জাক খান, মোঃ হেলাল উদ্দিন এবং নুরুল ইসলাম।
প্রশ্ন: তাদের সাক্ষী করেছেন?
উত্তর: না।
প্রশ্ন: যে ২টি মামলার আলামত জব্দকারী ও তদন্তকারী ব্যক্তি একই?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগমের জব্দকৃত আলামত ও রেকর্ডকৃত জবানবন্দী ব্যবহার করেছেন?
উত্তর: আলামত করিনি। জবানবন্দী ব্যবহার করেছি।
প্রশ্ন: এই মামলায় সরকারি গোপনীয় নথিপত্র ডকুমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করেছেন?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: অধ্যাপক গোলাম আযম কর্তৃক ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপরাধমূলক কার্যক্রমের তথ্য সম্বলিত নথি আপনার কাছে সরবরাহ করা হয়?
উত্তর: নথির বিষয়বস্তু গোপনীয় বিধায় বলা সম্ভব নয়।
প্রশ্ন: এই নথির কোন অংশ ডকুমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করেছেন?
উত্তর: এই নথির কোন অংশ সরাসরি ডকুমেন্ট হিসেবে দাখিল করিনি। তবে সেখান থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সংগৃহীত ডকুমেন্ট আদালতে দাখিল করেছি।
প্রশ্ন: গোপনীয় ডকুমেন্ট ব্যবহার করার জন্য স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়েছেন?
উত্তর: যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েছি।
প্রশ্ন: অনুমতির জন্য কয়টার তালিকা করেছেন আর কয়টার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে?
উত্তর: আমি যতটার চেয়েছি, সেগুলো প্রয়োজন মতো ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছি।
প্রশ্ন: একপক্ষ পত্রিকার তথ্য ব্যবহার করার অনুমতি চেয়েছেন?
এই প্রশ্ন নিয়ে আপত্তি তুলে প্রসিকিউশন। ক্ষাণিকক্ষণ বিতর্ক চলে এ প্রশ্ন নিয়ে। পরে ট্রাইব্যুনাল প্রশ্নটি গ্রহণ করেনি।
প্রশ্ন: কয়জন লেখকের বিবৃতি পর্যালোচনা করেছেন?
উত্তর: অনেকের লেখা পর্যালোচনা করেছি। তবে কারো নাম বলতে পারছি না।
প্রশ্ন: তাদের নাম নোটে আছে?
উত্তর: নোটে আছে কিনা তাও বলতে পারছি না।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস, সম্পাদনা প্রফেসর সালাহ উদ্দিন আহমদ, মেনন সরকার এবং ড. নূরুল ইসলাম মঞ্জুর, হাজার বছরের বাংলাদেশের ইতিহাসের এ্যালবাম, সম্পাদনা ড. মু. হান্নান। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, লেখক লে. কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরী, বীর উত্তম, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১, লেখক রফিকুল ইসলাম বি. ইউ. বাংলাদেশ ডকুমেন্ট, সম্পাদনা শামসুল আরেফীন, হোয়াই বাংলাদেশ (বাজেট), শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারকগ্রন্থ, সম্পাদনা আনিসুজ্জামান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র, সম্পাদনা হাসান হাফিজুর রহমান, মহান একুশে সুবর্ণ জয়ন্তি গ্রন্থ, দি রেপ অব বাংলাদেশ রিটেন বাই এ্যানথনি মাসকারেনহাস বই সমূহ পর্যালোচনা করেছেন?
উত্তর: পর্যালোচনা করেছি এবং এ সব বইএ মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি ও ইতিহাস সম্পর্কে যে সব তথ্য দেয়া হয়েছে, তা পর্যালোচনা করে তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করেছি।
প্রশ্ন: তদন্তকালে এটিএন মিউজিক এক্সক্লুসিভ ডিভিডি-মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পর্যালোচনা করেছেন?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: জাতীয় জাদুঘরের ভিডিও সিডি পর্যালোচনা করেছেন?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: উইকিপিডিয়ায় থাকা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পর্যালোচনা করেছেন?
উত্তর: করেছি।
প্রশ্ন: পাকিস্তান গেজেট, ইসলামাবাদ, ১ জানুয়ারি, ১৯৭১ পর্যালোচনা করেছেন?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: গেজেটের বিষয়বস্তু কি ছিল?
উত্তর: বলতে পারবো না।
প্রশ্ন: কয়টা বদ্ধভূমি ও গণকবর পরিদর্শন করেছেন?
উত্তর: সঠিক সংখ্যা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে যে সব স্থানে গিয়েছি, সেখানকার সব বদ্ধভূমি পরিদর্শন করেছি।
প্রশ্ন: চুকনগর বদ্ধভূমিতে গিয়েছেন?
উত্তর: না, যাই নি।
প্রশ্ন: কোন জেলায়?
উত্তর: খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানায়।
প্রশ্ন: ডুমুরিয়া থানা কোন সেক্টর ও সাব সেক্টরের অধীনে ছিল?
উত্তর: ৮ নং সেক্টরের অধীনে।
প্রশ্ন: চুকনগর হত্যাকান্ড কয় তারিখে সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তর: বলতে পারবো না।
প্রশ্ন: চুকনগর হত্যাকান্ড নিয়ে আপনি কোন তদন্ত করেন নি।
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: যে সব জেলায় তদন্ত কালে যেতে পারেন নি, সে সব জেলার হত্যাকান্ড, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের দায় দায়িত্ব নির্ধারণ করতে পারেন নি।
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: পঞ্চগড় জেলায় কয়টা বদ্ধভূমি আছে?
উত্তর: ৮টির তালিকা আছে।
প্রশ্ন: তালিকা কে করেছে?
উত্তর: সংশ্লিষ্ট এলাকাসমূহের ইউএনওগণ তালিকা তৈরি করেছেন।
প্রশ্ন: পঞ্চগড় সদরের তালিকা কোন তারিখে করা হয়?
উত্তর: এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।
প্রশ্ন: পঞ্চগড় সদরের অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা আছে?
উত্তর: এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই।
প্রশ্ন: ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা আছে?
উত্তর: এই মুহূর্তে নেই।
প্রশ্ন: ৭১ সালে পঞ্চগড়ে অপরাধের দায় দায়িত্ব তদন্তে নির্ধারণ করেন নাই।
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: পঞ্চগড়ে কতজন ধর্ষিতা হয়েছিল?
উত্তর: তথ্যটি এই মুহূর্তে নেই।
প্রশ্ন: পঞ্চগড়ে যারা ধর্ষিতা হয়েছে তাদের ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের জবানবন্দী গ্রহণ করেননি।
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: তাদের একজনের নামও আপনার কাছে নেই।
উত্তর: এই মুহূর্তে নেই।
প্রশ্ন: পঞ্চগড় সদরে গণহত্যার কোন তারিখ তদন্তে আসেনি।
উত্তর: এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।
প্রশ্ন: আপনার নোটে আছে?
উত্তর: বলতে পারবো না।
প্রশ্ন: জেলা প্রশাসক ও ইউএনওদের রেকর্ড কে তলব করেছে?
উত্তর: তদন্ত সংস্থা।
প্রশ্ন: কত তারিখে?
উত্তর: রেকর্ড না দেখে আমি বলতে পারবো না। রেকর্ডটি আমার হাতে নেই।
প্রশ্ন: কি কি বিষয় তলব করা হয়েছে?
উত্তর: যে স্মারকমূলে তলব করা হয়েছে, তা না দেখে বলতে পারছি না। চিঠিটা আমার কাছে নেই।
প্রশ্ন: কে দায়ী ছিল, রিপোর্টে তা উল্লেখ ছিল?
উত্তর: রিপোর্টটি আমার কাছে নেই। অফিসে আছে।
প্রশ্ন: রিপোর্টে কি আছে?
উত্তর: বিস্তারিত বর্ণনা বলতে পারবো না। তবে যতদূর মনে পড়ে বধ্যভূমি, গণকবর, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট ধ্বংস, নারী ধর্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছিল।
প্রশ্ন: প্রদর্শনী-৩ এ পত্রিকায় প্রকাশিত অধ্যাপক গোলাম আযম সংক্রান্ত খবরটি এপিপি পরিবেশিত?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: এই সংবাদে উল্লেখ আছে যে, অধ্যাপক গোলাম আযম, ‘‘সেন্সরশিপ প্রত্যাহারেরও আহবান জানান। তিনি বলেন, এর ফলে কে কি করতে চায়, তাহা জানার ব্যাপারে সরকারকে সাহায্য করবে’’। এ কথা আছে?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: সেন্সরশিপ নিয়ে তদন্ত করেছেন?
উত্তর: না।
প্রশ্ন: প্রদর্শনী-৪ এ উল্লেখিত সংবাদটি পিপিআই সংবাদ সংস্থা কর্তৃক পরিবেশিত সংবাদ?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: উক্ত সংবাদে, ‘‘পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর প্রধান অধ্যাপক গোলাম আযম বলেছেন, পূর্ব পাকিস্তানে স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত জনগণের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায় না।’’ উল্লেখ আছে?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: উক্ত সংবাদে, অধ্যাপক গোলাম আযম বলেন, ‘‘দেশের উভয় অংশকে কেবলমাত্র সেই আদর্শের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ রাখা যেতে পারে, যে আদর্শের ভিত্তিতে পাকিস্তান জন্মলাভ করেছে।’’ তা উল্লেখ আছে?
উত্তর: হ্যাঁ।
বিকেল ৪টা ১৭ মিনিটে মামলার কার্যক্রম আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
--------ইন্টারনেট থেকে 

No comments:

Post a Comment